মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে না পারলে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে। দেশের অর্ধেক জনগোষ্টি নারীকে উন্নয়নের বাহিরে রেখে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হতে পারবে না। নারী নির্যাতন নারীর ক্ষমতায়নের অন্তরায়। নারীর ক্ষমতায়ন ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, প্রত্যেক পরিবারে নারীর প্রতি সম্মান ও শিশুর প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করলে সমাজ থেকে তাদের প্রতি সকল ধরনের সহিংসতা হ্রাস পাবে। আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ার,বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের(বিসিসি )অডিটোরিয়ামে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে‘ ম্যানেজিং ভায়োল্যান্স এগেইনেস্ট উইমেন এন্ড চিলড্রেন’ নামে একটি ওয়েব বেইসড সিস্টেমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে নারীদের দক্ষ এবং যোগ্য করে গড়ে তুলতে দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে প্রতি বিভাগ জেলা ও উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজার নারীকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপসি’ত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম এন ডি সি,আইসিটি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার,মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহিন আহমেদ চৌধুরী।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক এস এম আশরাফুল ইসলাম,তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হা্রুনুর রশিদ,তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সুশান্ত কুমার সাহা,অতিরিক্ত সচিব পার্থ প্রতিম দেব,কন্ট্রোলার অথরিটি আবুল মনসুর মোহাম্মদ সারফ উদ্দিনসহ আইসিটি ডিভিশনের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্তিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে অ্যাপটি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নাছিমা বেগম বলেন এই বিশেষ ওয়েব সিস্টেমের মাধ্যমে নারী শিশুরা খুব উপকৃত হবে। এটা সময় উপযোগী একটি উদ্যোগ। এই জন্য তিনি আইসিটি ডিভিশনকে ধন্যবাদ জানান।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে এবং বাংলাদেশী বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান রিভ সিস্টেম-এর সহযোগিতায় নারী ও শিশুকে দ্রুততার সাথে সহযোগিতা করা এবং এসকল সার্বক্ষণিক ট্র্যাকিং করার মাধ্যমে স্বচ্ছ ও দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণের সুবিধা সম্বলিত বিশেষ ওয়েব বেইসড সিস্টেমে তৈরী করা হয়েছে। ‘ম্যানেজিং ভায়োল্যান্স এগেইনেস্ট উইমেন এন্ড চিলড্রেন’ ওয়েব বেইজড এপ্লিকেশন ওয়েব সাইট www.vawcms.gov.bd ।
উল্লেখ্য দেশের যেকোন প্রান্তের নারী ও শিশু মোবাইল,কম্পিউটার ও ল্যাপটপের মাধ্যমে ঘরে বসেই অথবা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কার্যালয়ে সশরীরে উপস্তিত হয়ে এই ওয়েবসাইট ব্যবহার করে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে অভিযোগ করতে পারবে । পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুর সমস্যা দ্রুত নিরসনে নিজ এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক ব্যক্তিরাও সার্বক্ষণিক ট্র্যাকের মাধ্যমে তা নিস্পত্তি করতে পারবেন।
এই বিশেষ ওয়েব অ্যাপে ম্যাজিস্ট্রেট,ডিসি,টিএনও,ওসি ,উপজেলা ও জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও মহিলা অধিদপ্তরের ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে এর অ্যাকসেস থাকবে।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, পারিবারিক মূল্যবোধের অভাব এবং ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ব্যাস্ততার কারণে নারী ও শিশু সুরক্ষার ঝুঁকি বাড়ছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এ ধরনের ঝুঁকি কমানো যায়। তাই সহিংসতাকালীন তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগ জানালে বিপদগ্রস্ত নারী ও শিশুকে দ্রুততার সাথে সহযোগিতা করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখলেও পরবর্তী সরকারগুলো তার ধারা অব্যাহত রাখেনি। নারী ও শিশুর উন্নয়ন বারবার বাঁধাগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমান সরকার সকল প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ করা এবং তাদের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
(মোহাম্মদ আবুল খায়ের)
জনসংযোগ কর্মকর্তা
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়
ফোনঃ ৯৫৪৫২২৫, মোবাইলঃ ০১৭১৬-০৬৬৮৮৮