মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন কানাডার উইমেন, পিস ও সিকিউরিটি অ্যাম্বাসেডর মিজ জ্যাকুলিন ও’নিল (Ms. Jacqueline O’Neil)। আজ বৃহস্পতিবার (১সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সচিবালয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে তারা মহামারী, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তন, সংঘাত ও যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নারী এবং শিশুর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতা প্রতিরোধে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, যুদ্ধ ও সংঘাতময় সময়ে নারীর নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ২০০০ সালের রেজুলেশন ১৩২৫ প্রণয়নে বাংলাদেশ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। যার উদ্দেশ্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সকল নীতিমালা তৈরি, বিশ্লেষণ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় নারীদের সম্পৃক্তকরণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীদের সমঅংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। এরই আলোকে বাংলাদেশ নারীর শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৯-২০২২ প্রনয়ণ করেছে। যা ১১ টি মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশে দুই হাজার তিনশত বাইশ জনে নারী শান্তি বিশ্বে বিভিন্ন সংঘাতময় স্থানে দায়িত্ব পালন করেছে এবং বর্তমানে পাঁচশত বিশ জন দায়িত্ব পালন করছে। তারা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনগঠন ও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করছে।
তিনি বলেন, নির্যাতনের স্বীকার হয়ে বাংলাদেশে প্রায় ১২ লাখ মিয়ানমারের নাগরিক আশ্রয় গ্রহণ করেছে। এদের উল্লেখযোগ্য অংশ নারী ও শিশু। এসময় প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বাংলাদেশে অবস্থিত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিজ দেশ মিয়ানমারে নিরাপদে ফেরত পাঠাতে সহযোগীতার জন্য কানাডা সরকারের প্রতি আহবান জানান।
সৌজন্য সাক্ষাৎকালে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে এদেশের নারীদের অসামান্য অবদান ও বীরত্বগাথা তুলে ধরে বলেন, বীর নারী মুক্তিযোদ্ধারা সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং তারা তাদের স্বামী ও সন্তানদের যুদ্ধে পাঠিয়েছেন। তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার, আশ্রয় ও তথ্য পাঠিয়ে সাহায্য করেছেন এবং ২ লাখ নারী আত্মত্যাগ করেছেন। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী দ্বারা ধর্ষিত ও নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে অনেক নারী। জাতির পিতা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত এসকল নারীকে বীরাঙ্গনা নাম দেন এবং তাদের নিজের কন্যা ঘোষণা করে সামাজে মর্যাদাপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আইন প্রণয়ন করেছেন।
কানাডার উইমেন,পিস ও সিকিউরিটি অ্যাম্বাসেডর মিজ জ্যাকুলিন ও’নিল বলেন, বাংলাদেশ নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এসময় তিনি আগামীতে উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন এবং সুরক্ষায় বাংলাদেশের সাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডিয়ান হাইকমিশনার লিলি নিকোলস (Ms Lilly Nicholls), মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ হাসানুজ্জামান কল্লোল, অতিরিক্ত সচিব মোঃ মুহিবুজ্জামান, অ্যাম্বাসেডরের এ্যাডভাইজর কেট ফিয়ানডার (Kate Fiander) ও কানাডা হাইকমিশনের কাউন্সেলর ব্রাডলি কোটস (Mr. Bradley Coates) উপস্থিত ছিলেন।