ঢাকা, ৩০ নভেম্বর, ২০১৭
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এম.পি বলেছেন, নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতা রুখতে সরকারের পাশাপাশি দেশের জনগণকেও আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আজ রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন এইডের নারী এবং কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতা বিষয়ক গবেষণামূলক প্রতিবেদন ‘কার শহর’ (হুজ সিটি) প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টার ফারাহ কবিরের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কমান্ডার মোহাম্মদ মুফতি মাহমুদ খান, বিআরটিএ’র সচিব মুহাম্মদ শওকত আলী, ঢাকা মেট্রোপলিটন আনসারের পরিচালক হিরা মিয়া, আরবান প্লানিংয়ের প্রফেসর ড: আক্তার মাহমুদ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. মালেকা বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহানাজ হুদা, ইউএন উইমেন এর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটিভ শওকো ইসহিকাওয়া। প্রতিমন্ত্রী বলেন, নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, জয় অ্যাপস ও জাতীয় হেল্প লাইন সেন্টার ১০৯ চালু হওয়ায় সহিংসতার হার কিছুটা কমেছে। এসব হেল্পলাইন ও অ্যাপস এর বিষয়ে আরো সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পাঠ্যপুস্তকে তা সংযোজন করা হয়েছে। এ সহায়তার বিষয়ে গণমাধ্যমকেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে বলে প্রতিমন্ত্রী মত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন সূচকের দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে। তথ্য ও প্রযুক্তিতে সফলতার স্বাক্ষর রাখছে দেশের মানুষ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পারিবারিকভাবে সন্তানকে মানবিকভাবে যোগ্য ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে কার্যক্রম চর্চায় গড়ে তুলতে হবে। অনুষ্ঠানে বক্তারা পাবলিক পরিবহনে নারীর নিরাপত্তা, বাসচালক ও হেলপারদের জেন্ডার সচেতনতা ভিত্তিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা প্রণয়ন, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানিসহ সকল ধরনের জেন্ডার বৈষম্য এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ মার্কেট প্লেসে শৌচাগার ব্যবস্থা বৃদ্ধি করার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এছাড়াও সড়ক ও গণপরিবহনে নারীর নিরাপত্তা জোরদার,ফুটপাত নারীবান্ধব করা, পর্যাপ্ত যাত্রী ছাউনি নির্মান, নারীর জন্য বাজেটের সাথে বিশেষ বরাদ্দ প্রদান করার উপরও সুপারিশ করা হয়। প্রতিমন্ত্রী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসাবে এ গবেষণা প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। বিশ্বব্যাপী ১৬ দিন ধরে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উপলক্ষে একশন এইড বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪৫ টি দেশে ‘কার শহর’ শীর্ষক এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গবেষণায় বাংলাদেশ, ব্রাজিল, কঙ্গো, জর্ডান, লাইবেরিয়া, নেপাল, নাইজেরিয়া, সেনেগাল,দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়েতে নগরে নারীর নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে এ গবেষণায়। এতে নারীর প্রতি সহিংসতার সামগ্রিক পরিস্থিতি, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আইন কাঠামোর উপস্থিতি, নারীর প্রতি সহিংসতা নিরসনে বাজেট বরাদ্দের পরিকল্পনা, জেন্ডার সংবেদনশীল নগর পরিকল্পনা এবং জেন্ডারবান্ধব গণপরিবহণ পরিকল্পনা এবং নকশা। প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, ঘরে, বাইরে এবং গণপরিসরে নারীর প্রতি সহিংসতার বিস্তারিত তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আইন প্রণয়ন করতে হবে। সরকারি কাঠামো, কর্মক্ষেত্র, বিচারবিভাগসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লিঙ্গভিত্তিক বৈসম্য দূরীকরণে প্রত্যক্ষ নীতিমালা, সেবাসমূহ এবং উদ্যোগ গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে নীতিমালা প্রণয়ন, প্রকল্প, সেবা প্রদান এবং বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে নারী ও সহিংসতার শিকার ব্যক্তির অংশগ্রহণের প্রত্যক্ষ সুযোগ প্রদান, বাস স্টপ, শেল্টার, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে স্বচ্ছ উপাদান ব্যবহার, পথ নির্দেশনার তথ্য বোর্ড, জরুরি ফোন নম্বর, পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ জানানো হয়।
( মোহাম্মদ আবুল খায়ের )
জনসংযোগ কর্মকর্তা
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়
ফোনঃ ৯৫৪৫২২৫, মোবাইলঃ ০১৭১৬-০৬৬৮৮৮